Tuesday, June 30, 2009

চলচ্চিত্র ও ইহুদীবাদ

চলচ্চিত্র এবং ইহুদীবাদের মধ্যে সম্পর্কের রহস্যটি কি? গত শতাব্দীর বহু গবেষক এবং বিশেষজ্ঞের কাছে এটি ছিল একটি বিশেষ জিজ্ঞাসা। কিন্তু সে জিজ্ঞাসার সন্তোষজনক কোন জবাব তারা নিরূপণ করতে সক্ষম হননি বলেই প্রতীয়মান হয়।
সুনিদিষ্ট জবাব নিরূপিত না হলেও এই শিল্পখাতের ওপর আন্তর্জাতিক ইহুদীবাদের অনস্বীকার্য প্রভাব নিয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করবেন না।
নানা কৌশলে এই শিল্পকলা ইহুদীচক্রের বহুবিধ উপকার ও স্বার্থ পূরণে ব্যবহৃত হচ্ছে। এই দাবী নিছক কোন সংস্কার প্রসূত ধারণা নয়, বরং দ্বিতীয় সহস্রাব্দের শেষভাগে বিশ্বব্যাপী সিনেমা শিল্পের বিপুল ব্যাপ্তি ও বিকাশ লাভের প্রেক্ষাপটে এই ধারায় সম্পাদিত বিস্তর গবেষণা ও অধ্যয়নের সূত্রেই সেটি স্পষ্ট।
আজ হলিউডে যে সকল ব্যক্তিত্ব সর্বাধিক খ্যাতি সম্পন্ন এবং প্রভাবশালী -তাদের অধিকাংশই ইহুদী। প্রকৃতপক্ষে কেবল ইহুদী হবার কারণেই তারা অন্যদের তুলনায় অধিকতর সুযোগ সুবিধা ও আনুকুল্য লাভে সক্ষম হয়েছেন, উঁচু মাত্রায় সফল ক্যারিয়ার বিনির্মাণ করতে পেয়েছেন। বস্তুতঃ ইহুদীবাদ হচ্ছে চিন্তা ও বিশ্বাসের জগতে একটি স্বতন্ত্র মতবাদ-যা কিনা মুসা (আঃ)কর্তৃক প্রচারিত ইহুদী ধর্ম থেকে ভিন্নতর। ইহুদীবাদ আর ইহুদীধর্ম -এই উভয়ের মধ্যকার পার্থক্য বিশেষ ভাবে প্রণিধানযোগ্য এবং দু'টোকে এক হিসাবে বিবেচনার অবকাশ নেই। কিন্তু ইহুদীবাদ তার উদ্ভবের সময় থেকেই ইহুদী ধর্মের মুখোশ পরিধান করে এগুতে চেষ্টা করেছে এবং এ কারণে তাদের গোপন সংঘ বা ক্লাবের প্রায় সকল সদস্য বাছাই করা হয়েছে ইহুদীদের মধ্য হতে। এ সকল ইহুদী ধর্মাবলম্বী যাদেরকে ইহুদীবাদী বলাই শ্রেয় তারা পাশ্চাত্যের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রসমূহ অন্যদের চাইতে অগ্রসর অবস্থানে অধিষ্ঠিত ।
শিল্পকলা ও প্রযুক্তির অন্যতম প্রতিভু হলিউড এই প্রাসঙ্গিকতার বাইরে নয় এবং এই বাস্তবতাকে সে কখনও অস্বীকারের চেষ্টাও করেনি। হলিউডের জটিল প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা বেশ কিছু অলিখিত রীতি-নীতি অনুসরণ করে চলে। যেমন , সেখানকার উঁচু পর্যায়ে শিল্প , পেশাজীবী এবং সংবাদ মাধ্যম সংশ্লিষ্ট চাকরি সমূহে ইহুদীরাই নিয়োগ প্রাপ্তির জন্যে প্রথম পছন্দ। এটা হচ্ছে সর্বাবস্থায় ইহুদীদেরকে অগ্রাধিকার প্রদানের রীতি এবং সে সকল ইহুদীদের মধ্যে যাদের ইহুদীবাদী চেতনা বিদ্যমান তারা শীর্ষ পর্যায়ে উন্নীত হবাব ক্ষেত্রে অধিকতর আনুকূল্য পেয়ে থাকে । অন্যদিকে, কোন ইহুদী যদি ইহুদীবাদী নীতি ও কর্মকৌশলকে সমর্থন করতে ব্যর্থ হয় তাহলে ইহুদী ধর্মাবলম্বী হওয়া সত্তেও তিনি হলিউডের গৌরব হিসাবে কৃতিত্ব অর্জনের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হয়ে থাকেন ।
মাফিয়া-চক্রের কর্তৃত্বাধীন পরিচালিত হলিউডে সাধারণ কোন ইহুদী যিনি উগ্রইহুদীবাদী চেতনায় বিশ্বস্ত নন তার জন্য কোন সহানুভুতি নেই। এর প্রকৃষ্ট প্রমাণ চলচ্চিত্র জগতের শেষ্ঠ শিল্পীদের একজন বিশ্ববিখ্যাত চার্লস চ্যাপলি যাঁকে দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দেয়া হয় এবং জীবনের শেষ পাঁচটি বছর নির্বাসিত ও নিঃসঙ্গ জীবন যাপনে বাধ্য করা হয়।
চার্লস চ্যাপলিন একটি দরিদ্র ইহুদী পরিবারে জন্ম নিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে চলচ্চিত্র শিল্প বিকশিত হবাব গোড়ার দিকেই চ্যাপলিন স্বীয় মেধা ও সৃজনশীলতার বদৌলতে ব্যাপক খ্যাতি ও অর্থ অর্জনে সক্ষম হন। ইহুদী শিল্পী হিসাবে তিনি পপ্রথম পপ্রথম একজন সৎ ও বাস্তহারা ইহুদীর চরিত্রে অভিনয় করেন। হলিউডের নীতি-নির্ধারকগণ পপ্রথমটায় ঠিক এমনটিই চেয়েছিলেন। ফলশ্রুতিতে চ্যাপলিন দ্রুত হলিউডের সর্বাধিক খ্যাতিসম্পন্ন শিল্পীদের একজন হয়ে যান এবং এই খ্যাতি তাকে নিজের নির্মিত ছবি পপ্রকাশে উদ্বুদ্ধ হবার সুযোগ করে দেয়।
একপর্যায়ে তিনি অনুভব করেন, হলিউডের মাফিয়াচক্রের সৃষ্টনিয়ম পদ্ধতির বেড়াজাল ছিন্ন করে প্রকৃত সত্যকে তুলে ধরার সময় এসেছে। প্রতীকী দরিদ্র ও নির্যাতিত ইহুদীর চরিত্রে অভিনয়ের পরিবর্তে চ্যাপলিন এমন সব চরিত্রে অভিনয় শুরু করেন যেখানে তাকে দেখা যায় একজন দাম্ভিক বিত্তশালী হিসাবে অথবা একজন অত্যাচারী একনায়ক হিসাবে।এমনি কৌশলে চ্যাপলিন পশ্চিমা মূল্যবোধের মুখোশ উন্মোচন করতে থাকেন। ইহুদীবাদী গোষ্ঠী এহেন প্রবণতাকে মোটেই মেনে নিতে পারলেন না এবং তারা দ্রুত চ্যাপলিন সম্পর্কে একটি নেতিবাচক ধারণা ছড়িয়ে দিতে যত্নবান হলেন। তারা চ্যাপলিনকে কমু্যনিষ্ট বলে অভিযুক্ত করলো এবং তার দ্বারা অভিনয় বা ছায়াছবি নির্মাণ কাজের ওপর অঘোষিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো। আর এভাবেই জীবনের মাঝপথে শেষ হয়ে যায় চলচ্চিত্র ইতিহাসের কিংবদন্তী চ্যাপলিনের চলচ্চিত্র ক্যারিয়ার। কারণ ছিল একটাই, চ্যাপলিন ইহুদীবাদী উগ্র চেতনাসম্পন্ন গোষ্ঠীর দাবীর কাছে মাথা নত করেননি। চ্যাপলিনকে যুক্তরাষ্ট্র ত্যাগে বাধ্য করা হয় এবং তার দেশে ফিরে আসার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারী করা হয়। চ্যাপলিনের কাহিনী আমেরিকার চলচ্চিত্র শিল্পের জগতে কোন একক ঘটনা নয়। বরং ইহুদী হবাব পাশাপাশি ইহুদীবাদী মতাদর্শের জন্য নিষ্ঠার পরিচয় দিয়ে অনেকেই রাতারাতি বিত্তবিভব এবং খ্যাতির শীর্ষে উঠে আসতে সক্ষম হন।
সমপ্রতি ইন্টারনেটে হলিউডের ইহুদী তারকাদের নামের একটি দীর্ঘ তালিকা পাওয়া গিয়েছে। তালিকার শিরোনাম হচ্ছে, 'হলিউড কি ইহুদীদের'?
২৮পৃষ্ঠার তালিকার সংকলক জানাচ্ছেন যে, এই নামসমূহ সম্পূর্ণ কোন তালিকা নয়। উক্ত তালিকায় ব্যাপকভাবে পরিচিত ইহুদী প্রযোজক, পরিচালিত, অভিনেতা, অভিনেত্রী, চিত্র সংলাপ লেখক এবং সংগীতজ্ঞদের দেড় হাজার নামের উল্লেখ রয়েছে।
হলিউডের ইহুদীবাদী গোষ্ঠী সর্বাধিক কৃতিত্ব অর্জন করেছে শিশুদের জন্য গতিময় আকর্ষণীয় ছবি নির্মাণ কাজে। ডিজনী ওয়াল্টের নাম শোনেনি এমন লোক এখন নেই বললেই চলে। স্মরণ করা যেতে পারে যে, ডিজনী ওয়াল্টের পপ্রথম বিখ্যাত চরিত্র ছিল মিকি মাউজ, যে চিত্রিত হয়েছে একজন নির্যাতিত ইহুদী হিসাবে এবং অপেক্ষাকৃতশক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীদের দ্বারা সব সময় চাপ ও হুমকির মধ্যে থেকেও স্বীয় মেধা বলে সকল প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে সফল এক নায়করূপে আবির্ভূত হয়েছে। একই চিত্র টম এবং জেরীর বেলাতেও প্রযোজ্য। এসব কার্টুন চরিত্রের বৈশিষ্ট্য হচেছ এরা অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন এবং দেখতে কুৎসিত এবং দর্ুবল হবাব কারণে প্রথম দিকে অন্যদের কাছে উপেক্ষা ও উপহাসের পাত্র থাকে কিন্তু শেষটায় গিয়ে তারা তাদের শক্তিশালী প্রতিপক্ষের ওপর জয়লাভ করে এবং প্রতিহিংসা উদ্দীপ্ত করে।
কুৎসিত ডাকর্লি এবং ডাম্বু, উড়ন্ত হাতি এরূপ চরিত্রের উদাহরণ। ডাম্বুর মা এমন টুপি পরতেন যা থেকে বোঝা যায় যে, তিনি একজন ইহুদী এবং তাকে নিজ সন্তানের পক্ষাবলম্বনের কারণে কারা নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছিল। অপর এক দৃশ্যে দেখা যাবে যে, ডাম্বু একটা সার্কাসে এমন একটি পতাকা উত্তোলন করছে যা কিনা- ইহুদীবাদী রাজত্বকালের সদৃশ পতাকা।
হলিউডের ইহুদীবাদী কতর্ৃত্ব কোন কিছুতে শ্রদ্ধাশীল নয় বরং তারা সমাজের অধিকাংশ ইতিবাচক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়ায়, এমনকি ধর্মীয় বিশ্বাস ও চেতনার বিরুদ্ধেও তারা তৎপর।
ঐসব ছায়াছবির কিছু কিছু কাহিনী এমন ভাবে সাজানো হতো যাতে দর্শকদের কাছে সুনিদিষ্ট রাজনৈতিক বার্তা পেঁৗছে যায়। যেমন সিংহ রাজা (দি লায়ন কিং) বইটিতে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙ্গে যাওয়া এবং সেই সূত্রে দুই পরাশক্তির দীর্ঘ কালের দ্বন্দ্বের অবসানের ঘটনা প্রবাহকে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গীসহ রূপকভাবে প্রকাশ করা হয়েছে।
একই নির্মাতা কোম্পনী নুহ (আঃ), মুসা (আঃ), ইউসুফ (আঃ) প্রমুখ বিশিষ্ট নবীদের জীবনী কেন্দ্রিক বেশ কিছু উপভোগ্য ছায়াছবি নির্মাণ করেছে যে গুলো মূলতঃ বিকৃত কাহিনীকে ভিত্তি করেই নির্মিত।
এধরণের মূর্ত চিত্রকর্ম ছাড়াও হলিউডের ইহুদীবাদী গোষ্ঠী সামপ্রতিক কয়েক দশকে শিশুদের জন্য নির্মিত ছবিগুলোতে বিশেষ চরিত্রের গতানুগতিক কাহিনী বার বার বহুভাবে উপস্থাপন করেছে। অধিকাংশ ছবির কেন্দ্রীয় চরিত্র হচ্ছে পিতামাতার নিকট থেকে হারিয়ে যাওয়া বা অপহৃত শিশু সন্তানের বেড়ে ওঠার কাহিনী। কাহিনীর গতানুগতিকতায় স্থান পেয়েছে বাস্তুভিটা ত্যাগী ইহুদী সন্তানের পরিবার, বাসস্থান ও উত্তরাধিকার বঞ্চনার গল্পকথা ।

#2#

প্রায় আশি বছর আগে, হেনরী ফোর্ড আমেরিকানদেরকে সে দেশে নৈতিক ও আর্থিক দুর্নীতি জনিত বিপর্যয়ের ব্যাপারে সচেতন হবার আহ্বান জানিয়ে ছিলেন। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সমপ্রদায় গুলোর নৈতিক বাঁধন শিথিল করার লক্ষ্যে সুচারুরূপে পরিচালিত পরিকল্পিত তৎপরতার ব্যাপারে আমেরিকাবাসীদেরকে সতর্ক হতে বলে ছিলেন। প্রেসিডেন্ট ফোর্ড স্বীয় দেশ আমেরিকার অভ্যন-রে ইয়াহুদীদের সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক রাজত্ব কায়েমের বিপক্ষে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চেয়ে ছিলেন। তিনি এটা সম্যকভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে, ইয়াহুদীরা আমেরিকার অর্থনীতি ও রাজনীতিকে লক্ষ্য করে এগুচ্ছে এবং সে জন্য তারা সে দেশের সংস্কৃতি ও গণমাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ব্যাপক অনুপ্রবেশের ব্যাপারে সচেষ্ট তিনি জানতেন আমেরিকান সিনেমা ইয়াহুদীদের হাতে চলে গিয়েছিল এবং এটাই ছিল ইয়াহুদীদের সর্বাধিক কার্যকর প্রপাগান্ডার মাধ্যম। আমেরিকার সমাজকে তার সনাতন মূল্যবোধের অবস'ান থেকে দূরে সরিয়ে নিতে ইয়াহুদীদের নিরালস চেষ্টার ব্যাপারটি তিনি অনুধাবনে সক্ষম হয়েছিলেন।
তাঁর লেখা অন্যতম বিক্ষ্যাত বই ‘আমার বীবন এবং আমার বড় হবার কাহিনী’ ( মাই লাইফ আ্যান্ড মাই ক্যারিয়ার)। এই গ্রনে' শিল্পপতি ফোর্ড বলেন, “পরিচিত একটি প্রভাবশালী মহল আমেরিকার সমাজ জীবনে দূর্ণীতির প্রসার ঘটানোর কাজে যত্নবান হয়েছে। জনগণ ক্রমশঃ তাদের নৈতিক মূল্যবোধ গুলোর লালন থেকে দূরে সরে যাচ্ছে। আমরা আমেরিকান ইয়াহুদীদের অবমূল্যায়ন করি না; কিন' আমেরিকার জনগণের ধর্মবিশ্বাসে নাগা দেয়ার কাজে বিরুদ্ধাচারণ করি।... ”
দূর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, প্রেসিডেন্ট ফোর্ডের অধিকাংশ আশঙ্কাই আজ সত্যে পরিণত হয়েছে। ইসরাইলীরা ফিলিসি-নী ভুখন্ড জবরদখল করে নিয়েছে। আর যুক্তরাষ্ট্রে নীতি নির্ধারক মহলে ইসরাইলের রয়েছে দুর্দমনীয় প্রভাব। প্রকৃতপক্ষে আজকের যুক্তরাষ্টষ্ট্র হচ্ছে ইয়াহুদীবাদের শক্তির উৎস। আমেরিকান সমাজে নৈতিকতার অবক্ষয় এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, তাদের ধর্ম ও সমাজতত্ত্ববিদগণ এই সমাজের ভবিষ্যত নিয়ে পুরোমাত্রায় হতাশ এবং শঙ্কিত। মাত্র চার দশক আগে পাশ্চত্যে গড়ে ওঠে জাজ এবং রক ব্যান্ড নতুন সংগীত ধারা, যার পুরোধা হলেন লভিস প্রিসলি এবং রিংগো স্টারের মত ইয়াহুদী তারকা শিল্পীবৃন্দ। আমেরিকান যুব সমাজের কাছে মাইকেল জ্যাকসনের খ্যাতি, জনপ্রিয়তা ও ভাবমূর্তি সে দেশের শ্রেষ্ঠ চার্চ শুরু ধর্মীয় ব্যক্তিত্ববৃন্দের চেয়েও বেশী। বিগত শতাব্দীর ৬০-এর দশকে বিট্‌ল্‌স্‌ নিজদেরকে খোদার চেয়েও বেশী খ্যাতিমান বলে ভাবতে শুরু করে ( নাউজুবিলাহ)। আর আজ শয়তানের পূজারী এসব ব্যাক্তি খোদার সাথে যেন প্রত্যক্ষ যুদ্ধের ঘোষণা দিচ্ছে।
রক সঙ্গীতের শহর হিসাবে খ্যাত ডেট্রিয়টে গেলে ব্যান্ড সঙ্গীতের উন্মাদনায় আসক্ত নতুন প্রজন্মের আমেরিকানদের ক্ষ্যাপাটে আচরণ প্রত্যক্ষ করা যাবে। বাঁধভাঙ্গা জোয়ারের মত উন্মত্ততা প্রতিরোধে পিতামাতা বা অন্য সবাই যেন নির্বিকার বা নির্লিপ্ত ও অসহায়।
হলিউডের প্রযোজিত কয়েক দশক পূর্বেকার ছবির সাথে তাদের এখনকার অবমুক্ত ছবিগুলোর তুলনা করলেই বোঝা যাবে যে, নৈতিক জগতে কতটা বিপুলায়তন বিপর্যয় সব কিছুকে গ্র্রাস করেছে। হলিউডের ইয়াহুদীবাদী কর্তৃত্ব কোন কিছুতে শ্রদ্ধাশীল নয় বরং তারা সমাজের অধিকাংশ ইতিবাচক মূল্যবোধের বিরূদ্ধে ঘৃণা ছড়ায়-এমন কি ধর্মীয় বিশ্বাস ও চেতনার বিরুদ্ধেও তারা তৎপর। একসময় অর্থ সম্পদকে পাশ্চাত্য মূল্যবোধের প্রথম উপাদান গণ্য করা হতো, হলিউড এখন এটার মোকাবিলায় অন্য সকল কিছুকে উপেক্ষা করতে শিখিয়েছে। হলিউডের কাছে এখন সেই চলচ্চিত্রই গুরুত্বের দাবীদার যার অর্থ রোজগারের সামর্থ্য বেশী। আর এ জন্য যে ধরণের ছবি প্রয়োজন সেটা হলো দর্শকের দুর্বল চিত্তে চাপ সৃষ্টি করা এবং পশ্চিমা মানুষের চরিত্রের সর্বনিম্ন কদর্য পরিচয়কে ব্যাপকভাবে উপস'াপন করা। হলিউড নিজে অর্থের নেশায় মত্ত তেমনি সে তার দর্শকদেরকেও অর্থলিপ্সু বানিয়ে ছাড়ছে।
ইয়াহুদীবাদের ৮ম প্রটোকলে উল্লেখ রয়েছে, আমাদের উপনিবেশ অর্থনীতিবিদদের দ্বারা সমৃদ্ধ। আর তাই ইয়াহুদীরা অর্থনীতির বিষয়টিকে খুব গুরুত্বের সাথে অধ্যয়নে সক্ষম হয়েছে। আমাদের রয়েছে বিপুল সংখ্যক ব্যাংকার, শিল্পপতি, কোম্পানী মালিক, পুঁজিপতি এবং বিশেষ করে বহু কোটিপতি। বাস-বতার দাবী হলো, সব কিছু নিয়ন্ত্রিত হয় অর্থের অঙ্কের জোরে। উপরের এই কয়েকটি বাক্য খেকেই প্রতীয়মান হয় যে, পুঁজিবাদী ভোগ-প্রবণতা এবং অর্থনৈতিক ধ্যান-ধারণা গড়ে তুলতে চলচ্চিত্র কেন একটি নিয়ামক ভূমিকা পালন করছে।
হলিউড নির্মিত মুভি সমূহের বিরাট অংশ জুড়ে আছে আর একটা মাত্রা নিবিড় ও সাবলীল নিপুণতায় উপস'াপিত সন্ত্রাস। শিশুদের জন্য নির্মিত ছবিগুলোতেও এর অবাধ অনুপ্রবেশ বিদ্যমান। উগ্র ইয়াহুদীবাদী গোষ্ঠী আমাদের শিশুদের ব্যাপারেও কোন বাছ-বিচারের ধার ধারে না।
বেশীর ভাগ সন্ত্রাস সম্পৃক্ত চলচ্চিত্রই রাজনৈতিক পটভুমিকে ভিত্তি করে নির্মিত হয়ে থাকে এবং একটি সূক্ষ্ম প্রচারণা কৌমল অনুসরণ করে। যেমন, ‘এয়ার ফোর্স ওয়ান’ শীর্ষক ছবিতে একজন ইয়াহুদী অভিনেতা আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে অভিনয় করেছেন। একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ বিমান ছিনতাই করে অন্যান্য যাত্রীদের সাথে প্রেসিডেন্টের পরিবারকেও জিম্মী করে ফেলে। প্রেসিডেন্ট নিজেকে বাঁচানোর সুযোগ পেয়েও সন্ত্রাসীদেরকে পরাজিত করার মানসে সেখানে থেকে গেলেন। ছবির শেষ দর্শকরা আমেরিকার প্রেসিডেন্টের অকুন্ঠ প্রশংসায় মেতে উঠলেন যেন তিনিই হলেন আধুনিক বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা। অপর একটি ছবিতে দেখানো হয়েছে যে, একদল মুসলিম সন্ত্রাসী আমেরিকান এয়ারলাইন্স-এর একটি বিমান ছিনতাই পূর্বক বিমানটিতে একটি পারমাণবিক বোমা স'াপন করে সেটা নিয়ে আমেরিকার উদ্দেশে অগ্রসর হচ্ছে আমেরিকার সরকারকে ধ্বংস করে দেয়ার উদ্দেশ্যে। সন্ত্রাসীরা বিমানের যাত্রীদের সাথে অত্যন- রূঢ় ও আক্রমণাত্মক আচরণে লিপ্ত। যাত্রীদের আকুতি-মিনতির প্রতি কোন উদারতা তো নয়ই অধিকন- তুচ্ছ কারণেও বুলেট ব্যবহার করা হচ্ছে নিরীহ যাত্রীদের ওপর। মানবদরদী আমেরিকান রাজনীতিবিদগণ বিমান ও যাত্রীদের নিরাপত্তার ব্যাপারে উদ্বিগ্ন হলেন। সতর্কতার সাথে বিশেষ ভাবে প্রশিক্ষিত কমান্ডো বাহিনীকে বিমানে প্রেরণ করা হলো। এই বাহিনীর নেতৃত্বে অভিনয় করেন দু’জন বিখ্যাত ইয়াহুদী অভিনেতা। কমান্ডো বাহিনী ঝটিকা আক্রমণ চালিয়ে সন্ত্রাসী বাহিনীকে কাবু করে ফেলে এবং বোমাটিকে নিস্ক্রিয় করে দিকে সক্ষম হয়। মুসলিম ছিনতাইকারীরা নিহত হয় এবং বিমানের নিরাপদ অবতরণ নিশ্চিত করা হয়। দর্শকদের মনে যা গেঁথে থাকলো সেটা হলো আমেরিকানদের সন্ত্রাসবিরোধী মানবিক ভূমিকা এবং কমান্ডো বাহিনীর বীরত্বপূর্ন কর্মকান্ড। আজকাল পারিবারিক বিনোদন ও শিশু-কিশোরদের বিনোদন সূচক কর্মসূচীতেও যৌনতা, সন্ত্রাস এবং অর্থলিপ্সা প্রতিফলিত হচ্ছে। অবস'াদৃষ্টে প্রতীয়মান হয় যে, নৈতিকতার প্রশ্নে হলিউড স্টুডিও গুলোর যেন কোন রকমের দায়বদ্ধতা নেই বরং তারা যেন সকল প্রকার অনৈতিকতার বিশ্বায়ন কর্মসূচী বাস-বায়নে ব্রতী হয়েছে।
এভাবে আনর্-জাতিক ইয়াহুদীবাদ মানুষের ত্রৈয়ী শক্তি যৌন কামনা, সন্ত্রাস এবং কল্পনা বিলাসকে প্ররোচিত করে বিশ্বব্যাপী অনৈতিকতা, শোষণ, অর্থলিপ্সা, সন্ত্রাস ইত্যাদিকে উস্‌কে দিচ্ছে এবং এসবের মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জনে সচেষ্ট রয়েছে।
অবশেষে ২১ শতাব্দীতে এসে এই চক্রান- চূড়ান- পর্যায়ে উপনীত হয়েছে। প্রায় এক শতাব্দী পূর্বেকার ইয়াহুদীবাদী প্রটোকলকে বিশ্লেষণ করলে সহজেই এই উপসংহারে উপণীত হওয়া যায় যে, আজকের বিশ্বে মানুষও সভ্যতা যে সীমাবদ্ধতা ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন তা মূলতঃ ইয়াহুদী তাত্ত্বিকদের পরিকল্পনার ফসল।
যাই হোক, মানুষের মধ্যে ধীরে ধীরে জাগৃতি আসছে এবং তাদের নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করে সুন্দর ভবিষ্যত বিনির্মাণে মনোযোগী হতে শুরু করেছে।